।।১।।
এক সময়ে ডায়েরি লিখতাম। সে অনেক অনেক দিন আগের কথা। ঢাকা শহরে তখন
আকাশ ছোঁয়া বাড়িঘর ছিল না। মানুষজন দোতালার ছাদে উঠেই আকাশ স্পর্শ করতে পারতো। ডিজুস
ছিল না, হিন্দি মেগাসিরিয়াল ছিল না, শপিং মল ছিল না, টি-২০ ছিল না, ইন্টারনেট ছিল
না – বলা যায় আমরা তখন সর্বহারা ছিলাম। সেই সময়ে রাতে ঘরে ফিরে একটা সিগারেট ধরিয়ে
মুখের উপর গল্পের বই নিয়ে শুয়ে থাকা ছাড়া আর তেমন কোনো বিনোদন আমরা আবিষ্কার করতে
পারিনি।
সেই ডায়েরির ভগ্নাংশ কিছুদিন আগে খুঁজে পেলাম। ওতে কয়েক দিনের
দিনলিপি আছে। উচ্চ মাধ্যমিকের পরের সময়। ওই সময়ে আমার মূল কাজ ছিল সকালে ঘুম থেকে
উঠে আড্ডা মারতে বের হওয়া এবং রাতে বাসায় ঘুমাতে আসা। সেই সময়ে আমাদের কিছু না
থাকলেও দিনগুলো বেশ বিচিত্র ছিল। প্রতিদিনই কিছু না কিছু ঘটছে – নতুন বন্ধু হচ্ছে,
পুরানো বন্ধু বিদায় নিচ্ছে, সংসদ ভবন প্রাঙ্গনে বিবাদ হচ্ছে, গান হচ্ছে, চটপটিতে
ঝাল বেশি হচ্ছে, মামুর দোকানে বাকি হচ্ছে, কেরু কোম্পানির পন্যে হাতেখড়ি হচ্ছে,
আমরা লাবণ্যময় পাথর দেখছি, ভাগ করে গাঁজা খাচ্ছি, রোদ-বৃষ্টি-আলো মাখছি গায়ে। জীবনটা ছিল প্রায় ধারাবাহিক স্পাই থ্রিলার মতো
উত্তেজনাকর।
।।২।।
সেই তুলনায় বর্তমান সময় নিতান্তই বর্ণহীন। বলা যায় আমার জীবনের
একদিনের ঘটনাগুলোকে “কন্ট্রোল-সি” চেপে কপি করে আগামী একবছর ধরে “কন্ট্রোল-ভি”
মেরে পেস্ট করে দেওয়া যাবে। তারপরও দিনিলিপি লিখতে বসলাম। তবে ভালো দিকটা হচ্ছে আর
একবছর কিছু লিখতে হবে না। বৈচিত্র্যহীনতাও অনেক সুবিধা নিয়ে আসে।
আর বাকি সব দিনগুলোর মতো আজকের দিনটাও শুরু হয়েছে সকাল সাড়ে
ছয়টায়। স্মার্ট ফোনের কল্যাণে অ্যালার্ম ঘড়িগুলো হাসপাতালের রাগী নার্সের মতো আর
ডাকাডাকি করে না। ওদের কন্ঠস্বর এখন অনেক মধুর, অনেক ভালোবাসা নিয়ে ওরা ডাকে আমায়।
প্রায় সকালের মতো আজো গুনগুন করলাম…তুমি ডাক দিয়েছো কোন সকালে কেউ তা জানে না…
রবীন্দ্রনাথ ছাড়া আর কোন কবিকে আমি সকাল বেলা নিয়ে কবিতা লিখতে
দেখি না। আজ সকালেও সেটা মনে হলো। তবে রবীন্দ্রনাথকে মনে হয় সকালবেলা অ্যালার্ম
দিয়ে উঠতে হতো না। আমি বিখ্যাত লোকদের নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করি না, শুধুমাত্র
রবীন্দ্রনাথ একমাত্র ব্যতিক্রম।
উনি সকালে চা আর সিগারেট খেয়ে বাথরুমে কবিতার খাতা নিয়ে যেতেন
কিনা এই প্রশ্নের উত্তর আমি মাঝে মাঝে খুঁজি। আমরা অতিমানব রবীন্দ্রনাথ সহজেই পাই
– কিন্তু মানুষ রবীন্দ্রনাথকে খুব বেশি দেখি না। সেই রবীন্দ্রনাথকে আমি প্রায়ই আমার
ব্যস্ত সকালবেলাতে খুঁজি, উনিও কি দ্রুত চা শেষ করে বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যেতেন
কিনা, পত্রিকাতে খবর পড়ে কাউকে “চ” অক্ষরের গালি দিতেন কিনা সেই সব প্রশ্নের উত্তর
কোথাও পাই নি। রবীন্দ্রনাথের উচ্চারিত সবচেয়ে খারাপ গালিটা কি ছিল এই নিয়ে হয়ত
কেউই গবেষণা করেন নি।
মহামানব রবীন্দ্রনাথকে প্রায় প্রতিদিনই স্মরণ করি।
জগৎ-মাঝারে যেথায় বেড়াবি,
যেথায় বসিবি, যেথায় দাঁড়াবি,
কি বসন্ত শীতে দিবসে নিশীথে
সাথে সাথে তোর থাকিবে বাজিতে
এ পাষাণ প্রাণ অনন্ত শৃঙ্খল
চরণ জড়ায়ে ধরে ।
।।৩।।
গাড়িতে উঠেই রেডিওটা ছেড়ে দেই। পেছনের সিটের বাচ্চাদেরও দায়িত্ব
হচ্ছে রেডিওর খবরের মানে বোঝা।
“আব্বু হোয়াই দ্যাট গাই কিল্ড সেভনটি সেভেন পিপল? হি উইল বি ইন
জেইল ফর টুয়েন্টি ওয়ান ইয়ার্স। হোয়াই ডিড হি ডু ইট?”
“টেক্সাসে আবারও ওয়াইল্ড ফায়ার হবে? আমার তখন কোথায় যাব?”
“নিউ অর্লিন্সে কেন এতো হারিকেন হয়? ডু দে হ্যাভ বোটস?”
পৃথিবীটা যে মারমেইডময় নয় সেটা আশাকরি ওরা অচিরেই বুঝে যাবে। প্রতিদিনের
বাস্তবতাকে সকাল সকাল পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমি ন্যাশানাল পাবলিক রেডিওকে ধন্যবাদ
দেই।
হায় সখা, এ তো স্বগর্পুরী নয়।
পুষ্পে কীটসম হেথা তৃষ্ণা জেগে রয়
মর্মমাঝে, বাঞ্ছা ঘুরে বাঞ্ছিতেরে ঘিরে,
লাঞ্ছিত ভ্রমর যথা বারম্বার ফিরে
মুদ্রিত পদ্মের কাছে। হেথা সুখ গেলে
স্মৃতি একাকিনী বসি দীর্ঘশ্বাস ফেলে
শূন্যগৃহে—হেথায় সুলভ নহে হাসি।
রবীন্দ্রনাথ থাকেন সারা সকাল জুড়ে।
।।৪।।
অফিসের অনেক লোকই বাসার থেকে কাজ করে। দিনে দিনে অফিস জনশূন্য হয়ে
যাচ্ছে। বাসায় বসে আমিও কাজ করেছি অনেকদিন। এরচেয়ে বিরক্তিকর কিছু আর নেই। চার্চ
আর স্টেটের মধ্যে যেমন পার্থক্য থাকা উচিত তেমনি অফিস আর বাসার মধ্যেও পার্থক্য
থাকা বাঞ্ছনীয়। ঘরে বসে কাজ সেই পার্থক্য ঘুচিয়ে দেয়। বাথরুমে ঢুকলেও তখন কাজ পিছু
ছাড়ে না। সব দেখে শুনে আমি নিয়মিত অফিসে আসা শুরু করেছি।
আমি অফিস ভালোবাসি। ভালো না বেসে উপায়ও নেই – দিনের তিনভাগের
একভাগ সময় এইখানে থাকি। এরসাথে কোন রকম গ্যাঞ্জামে জড়ানো ঠিক হবে না। আমার
সহকর্মীরাও প্রায় সব্বাই অফিস ভালোবাসেন। কোনদিন তারা ডোনাট অথবা টাকো নিয়ে বাকিদের
আপ্যায়িত করেন।
আমাদের অফিসে প্রায় সবাই মোটা লোক। এখানে চিকন মানুষকে অতিদ্রুত
মোটাতাজা করন প্রক্রিয়ার আওতায় নেওয়া হয়। সর্বশেষ যে পাতলা মেক্সিকান মেয়েটা
চাকুরিতে ঢুকেছিল সেও এখন মাশাল্লাহ বেশ ভালো স্বাস্থ্য বানিয়ে ফেলেছে।
টু-এম-২১৬ তে ডোনাট, কফি আর ড্যানিশ আছে। লগ ইন করেই মেসেজ পেলাম।
আমার মোটা হওয়ার ভয় নেই, তাই দ্রুতই ছুটে গেলাম টু-এম-২১৬তে।
“রিওর শরীর ভালো নেই…অনেক বছর ধরে আমাদের সাথে আছে…এইবার মনে হয়
বিদায় দিতে হবে, ও চোখেও দেখে না ভালো মতো…বার্ধক্যের শেষ সীমানা পৌঁছে গেছে
প্রায়…”
রিও মহিলার কুকুরের নাম। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ।
প্রায় আট হাজার ডলার খরচ করেছেন কুকুরের চিকিৎসার পেছনে। কুকুরটা অনেক
অংগপ্রত্যঙ্গ ফেল মারালেও গলার স্বর এখনো অক্ষুন্ন আছে।
সারাদিনে বলা যায় একবারই মাত্র আমি মানুষের সাক্ষাৎ পাই। সেই
সময়টা সাধারণত আবহাওয়া, খেলা, ক্রমনিম্নগামী অর্থনীতি, চিন আর ভারতের বিস্ময়কর
উত্থান, কুকুরের স্বাস্থ্য, ছুটির দিনের পরিকল্পনা – এই কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা
হয়।
রিওর জন্য দুঃখ প্রকাশ করলাম। লোকমুখে যদিও শুনেছিলাম অতি বজ্জাত
কুকুর। এইবেলা ঘুম পাড়িয়ে দেবেন মনে হচ্ছে। হাহাকার চলতে লাগলো।
দুটো ডোনাট আর এক কাপ কফি নিয়ে আমি রুমে ফিরি। কাজে মন দেই, কানে
ইয়ারফোন গুঁজে দিয়ে সেই বুড়োর গান শুনি আপন মনে। বুড়ো বেঁচে থাকলে ওনাকে হাতে-পায়ে
ধরে ফেসবুকে অ্যাড করতাম। ওনার প্রতিটি স্ট্যাটাসে কমেন্ট করতাম – ফাডায়ে ফালাইসেন
বস।
কলিযুগে হয় মানুষ অবতার – আর সেটাতে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং
সাইটেগুলোর ভালো ভূমিকা আছে। আমাদের জীবন এখন ভার্চুয়াল রিয়েলিটিমুখী।
জয়বাবা জুকারবার্গ।
আমার কানের কাছে সেই বুড়ো গান গেয়ে চলে।
মোরে না হেরিয়া নিশির শিশির ঝরে,
প্রভাত-আলোকে পুলক আমারি তরে এ কি সত্য।
মোর তপ্তকপোল-পরশে-অধীর সমীর মদিরমত্ত
হে আমার চিরভক্ত, এ কি সত্য...
।।৫।।
একটা সময় ছিল সকালে অফিসে ঢুকেই দুপুরে কোথায় লাঞ্চ খেতে যাবো সেই
পরিকল্পনা করতাম। সেই দিন এখন আর নেই। এখন আমার টার্গেট হচ্ছে কোনমতে কাজ শেষ করেই
বাসায় চলে যাওয়া। দুপুরে তাই অফিসের ক্যাফেটেরিয়াতে খাই।
পৃথিবীর আর সব ক্যাফেটেরিয়ার মতো এই ক্যাফেটেরিয়াতে অনেক অখাদ্য
পাওয়া যায়। গত পাঁচ বছর ধরেই পরিকল্পনা করছি নিজের অফিস রুমে একটা ছোট ফ্রিজ আর
মাইক্রোওয়েভ কিনবো। খাবার বানিয়ে সেখানে রাখবো আর সারাদিন সেখান থেকেই নিয়ে নিয়ে
খাবো – এই প্ল্যান এখনও প্ল্যান রয়ে গেছে। এই সংক্রান্ত ক্রয় কমিটি এখনো বৈঠকে
বসতে পারে নি, তাই বাস্তবায়নও হয় নি।
লাঞ্চের সাথে ফেসবুকের সম্পর্ক খুব মধুর। আমদের জীবনে ফেসবুক ঠিক
জানালা হলেও দরজার ফুটোর মতো। ওখানে উঁকি দিলে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। কারো মন বা
পেট খারাপ কিনা, কোন ছবিটা দেখতে হবে, কে নতুন কি বই পড়ল, কোন কাজে সোয়াব কি
পরিমান আসবে – এই সব কিছু সম্বন্ধে একটা সম্যক ধারনা জন্মে। আমি পতিত এক পাঠক, এখন
আর বই পড়ি না, সিনেমা খুব বেশি দেখতে পারি না, নিজের মন বা পেট খারাপ নিয়েই
চিন্তিত হই না – এইসব কারণেই হয়ত ধর্মীয় পোস্টগুলোই মনোযোগ দিয়ে পড়ি।
যতদূর মনে হয় সোয়াবের ইউনিট হচ্ছে নেকি। হয়ত কোথাও নেকির সংজ্ঞা
দেওয়া যাছে, নিউটনের বলবিদ্যায় যেমন বলের একক বলের সংজ্ঞা আছে হয়েছে – যে পরিমান
বল একক ভরের কোন বস্তুর উপর ক্রিয়া করে একক ত্বরণ সৃষ্টি করে – তেমনি হয়ত
পরিমানযোগ্য কোন ভালো কাজে এক নেকি সোয়াব হয়। সোয়াবের ব্যাপারটা অনেকটা এয়ারলাইনের
মাইলেজ প্রোগ্রামের মতো। কিছু কিছু দিন যেমন ডাবল বা ট্রিপল মাইলেজ পাওয়া যায়
তেমনি কিছু কিছু সময়ে তিন/চার/সত্তরগুন সোয়াব মিলে।
বলতেই হবে ধর্ম থেকে জিরাফ - সর্বত্রই একটু একটু মুক্তবাজারের
গন্ধ আছে। বাজার ব্যবস্থার বাইরের ঈশ্বরকে কোথায় খুঁজে পাই? বুড়ো দেখি এই বিষয়েও
অনেক কিছু বলে রেখেছে।
সংসারে মোরে রাখিয়াছ যেই ঘরে
সেই ঘরে রব সকল দুঃখ ভুলিয়া।
করুণা করিয়া নিশিদিন নিজ করে
রেখে দিয়ো তার একটি দুয়ার খুলিয়া।
মোর সব কাজে মোর সব অবসরে
সে দুয়ার রবে তোমারি প্রবেশ-তরে...
পাঁচটা বাজতে এতো দেরি হয় কেন? বাসায় ফিরবো কখন?
।।৬।।
“আব্বু একটা গল্প বল…”
“মিয়ানা আর টিয়ানার গল্প শুনবি…ওরা ভিনগ্রহের দুই বোন…ওদের গ্রহের
নাম হচ্ছে ফার ফার অ্যান্ড অ্যাওয়ে প্ল্যানেট…”
“না, আমি তোমার চাইল্ডহুডের গল্প শুনব…টেল মি অ্যাবাউট ইয়োর পেট…”
“আমার কুকুরের নাম ছিল জো…”
“হাউ ওল্ড ওয়ার ইউ?”
“আমার বয়েস তখন বারো…”
“নট ফেয়ার, আমার কোন কুকুর নাই কেন?”
“কেননা আম্মু বলেছে বাসায় কুকুর ঢুকলে সে এই বাসায় আর থাকবে না।”
“নট ফেয়ার…তুমি জো কে অনেক আদর করতে…”
“করতাম কিন্তু আমেরিকানরা কুকুর নিয়ে যেই কচলা-কচলি করে সেই রকম
না।”
“হোয়াট আদার পেটস ইউ হ্যাড?”
“আমাদের কবুতর ছিল…”
“নট ফেয়ার…”
“কালু আর টিনা নামে আমাদের দুটো গিনিপিগ ছিল। সীমানা পেরিয়ে নামে
একটা সিনেমা দেখে আমি ওদের নাম দিয়েছিলাম…কালু ছিল সাদা-কালো আর টিনার ছিল
সাদা-মেটে…টিনা প্রায়ই পালিয়ে যেত…”
“নট ফেয়ার…”
“আমাদের বাসায় একটা হাঁ করা কাক আসতো, তোর বড় চাচু ওর নাম দিয়েছিলেন
স্টুপিড কাক…হা হা হা…”
“নট ফেয়ার…”
“পাঁচিলের ওপর কাঁচ দেওয়া ছিল। মোটাসোটা বিড়াল হাঁটতো ওখান দিয়ে। ওদের
কেন পা কেটে যায় না সেটা নিয়ে অনেক ভাবতাম। দাদাভাইয়ে অনেক গাছ ছিল, কোকোনাট ট্রি,
পেয়ারা গাছ, জাম্বুরা কাছ, তেজপাতা গাছ, কাঁঠাল গাছ – বাসায় অনেক পাখি আসতো।
টিয়াপাখিরা ছিল সবুজ। আর ছিল ইয়া বড় বড় প্রজাপতি…খুব সাবধানে ওদের ধরে ছেড়ে দিলে
ওদের নকশা গায়ে মেখে রাখা যেত। সবচেয়ে বড় ভিলেন ছিল শুঁয়োপোকা।”
“নট ফেয়ার…”
ঘুমে ওদের চোখ জড়িয়ে আসে। নিদ্রাদেবীর আশির্বাদ আমিও পাই। কিন্তু
সেই বাসা আমার পিছু ছাড়ে না।
ঘুমের ঘোরে আমি যেন বর্ষণের শব্দ পাই। অনেক দূরের, অনেক আগের কোনো
একদিনের বৃষ্টির ঘ্রাণ সেন্ট্রাল এসির গুনগুনকে পরাভূত করে দেয়। রাতের রেলগাড়ির
আওয়াজ নিয়ে আসে বালকবেলা। মনে হয় আমার বন্ধুরা যেন কেউ পালটে যায় নি, হারিয়ে যায়
নি, আমার শহরকে কেউ হত্যা করেনি, আমার শৈশবের স্মৃতিচিহ্নগুলো ফ্যাকাশে হয় নি…আমি
তলিয়ে যাই ওদের ডাক শুনে।
তুমি ডাক দিয়েছ কোন্ সকালে কেউ তা জানে না,
আমার মন যে কাঁদে আপন মনে কেউ তা মানে না।
ফিরি আমি উদাস প্রাণে, তাকাই সবার মুখের পানে,
তোমার মতো এমন টানে কেউ তো টানে না।