মার্কিন দেশে এক সময় দাস প্রথা ছিল। আফ্রিকা থেকে জাহাজে করে মানুষ ধরে
নিয়ে আসা হতো। নির্মম অত্যাচার করা হতো ক্রীতদাসদের উপর। সেই প্রথা উঠে
যাওয়ার পরেও ভয়ংকর বর্ণবাদ ছিল। কেউ এইগুলো অস্বীকার করে না। সিভিল রাইটস
মুভমেন্টের পরে আইন করে আর মানুষের মধ্যে একটু একটু সচেতনতা তৈরি করে সেই
সব বৈষম্য কমিয়ে আনা হয়েছে।
হিটলার ছয় মিলিয়ন ইহুদি হত্যা করেছে। এই কথা কেউ অস্বীকার করে না। আরেকজন হিটলার যাতে তৈরি না হয়, সেই জন্য ইউরোপের দেশে দেশে আইন আছে, নাৎসীবাদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপটা হচ্ছে সমস্যাটা স্বীকার করতে হবে। এরপরে দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করা যাবে।
আমি বাংলাদেশি কমিউনিটিতে গিয়ে কখনো রাজনৈতিক আলাপ করি না। কিন্তু আমি না করলেও আলাপ শুরু হয়ে যায়। চোখ বন্ধ করা যায়, কিন্তু কান বন্ধ করা যায় না। বিএনপি আর জামাতের সরকার বিরোধী আন্দোলনে প্রায় প্রতিদিন বাংলাদেশে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারা হচ্ছে, কিন্তু এই কাজগুলো নাকি বিএনপি অথবা জামাতের না। এইগুলো সবই নাকি আওয়ামী লীগ করছে। এই ছাড়াও আরও অনেক তথ্য পাওয়া যায়। কিছুদিন আগে জানলাম ৯/১১ মার্কিন সরকারের কাজ। এর আগে একজন জানালেন যে আইসিসও আসলে পশ্চিমাদের এজেন্ট।
মানুষ এতো বলদ বা মূর্খ না। এই অস্বীকার ইচ্ছাকৃত। ৯/১১ বা আইসিস পশ্চিমাদের তৈরি হলে জঙ্গীবাদের সমাধান করার আর প্রয়োজন নেই। আওয়ামী লীগই যদি আগুন দিয়ে মানুষ মারে তাহলে বিএনপিকে জামাতি কলুষতামুক্ত করার কাজটা করার আর দরকার নেই।
অনেক বছর আগে ফুটবলের যাদুকর পেলে তাঁর টিম কসমসকে নিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন - প্রীতি ম্যাচ খেলতে। পত্রিকাতে পড়েছিলাম, পেলে নাকি প্রথমার্ধে কসমস আর দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিপক্ষের হয়ে খেলেছিলেন। তিনি সেই মাপে পৌঁছে গিয়েছেন, দুই দলের হয়েই খেলে দিতে পারেন।
এই সব বিশ্লেষণ শুনে শুনে আমার মাঝে মাঝে পেলের কথা মনে হয়। আওয়ামী লীগ সম্ভবত পেলের মাপের রাজনীতিতে পৌঁছে গেছে। শিক্ষিত বাংলাদেশিদের কথা অনুযায়ী, বিএনপি মিটিং করছে না, মিছিল করছে না, রাস্তাতেও নেই, আর বাসেও আগুন দিয়ে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি তাহলে কি করছেটা কি? আওয়ামী লীগই দেখি দুই সাইডে খেলছে।
বিএনপি-জামাত প্রতিদিন পুড়ায়ে মানুষ মারছে। এই সত্য কথাটা বলাটা খুব খুব কঠিন আমাদের জন্য, বিশেষত শিক্ষিত মানুষদের জন্য। কেননা এইটা স্বীকার করলেই বিএনপিকে দূষণমুক্ত করার দরকার পড়বে, জামাত নামক বিষফোঁড়া মুক্ত করার দরকার পড়বে।
ভালোবাসা আর ঘৃণা দুটোই মানুষের একদম মৌলিক অনুভূতি। ভালোবাসা ছোঁয়াচে কিন্তু ঘৃণা অনেক বেশি সংক্রামক এবং এর বিস্তার অনেক সরব। ঘৃণার সড়কে চলাচল দ্বিমুখি - আজকের পৃথিবীতে ঘৃণার সড়কে ট্র্যাফিক জ্যাম লেগে আছে, সেই ভিড় বাড়ছে আস্তে আস্তে। প্রতিদিনই নতুন নতুন জায়গা দখল করেই চলছে ক্রোধ আর প্রতিশোধের আগুন।
কিন্তু সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপটাই পার হতে পারিনি আমরা - নিজের ঘরে কতখানি নোংরা ময়লা আছে সেইটাই স্বীকার করতে পারি না।
আমরা প্যালেস্টাইনে ইজরাইল মানুষ মারলে হ্যাশট্যাগ দেই, সিরিয়াতে আইসিস মারলে চুপ করে থাকি। মার্কিন দেশে হেইট ক্রাইমে মুসলমান মরলে সরব হই, প্যারিসে পত্রিকা অফিসে গুলি চালালে সেই আওয়াজ না শোনার ভান করি। প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগে জাতি, ধর্ম, রাজনৈতিক বিশ্বাস, গায়ের রঙসহ আর যা যা আবজাব আছে সেইগুলো প্রথমে বের করি। আক্রান্ত মানুষগুলোর সাথে আমাদের কোন ঐক্য থাকলে সহমর্মি হই। দিনশেষে তাই আমরা মুসলমান অথবা হিন্দু অথবা বিএনপি অথবা আওয়ামী লীগ, কিন্তু আমরা কেউই মানুষ পরিচয়টা সামনে আনি না।
ঠিক এই কারনেই নিজের দেশে প্রধান বিরোধীদল দিনের পর দিন মানুষ মারলে সেটা এড়ায়ে যাই - পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্কে বলতে পারি না, এই বর্বরতা বন্ধ হোক।
হিটলার ছয় মিলিয়ন ইহুদি হত্যা করেছে। এই কথা কেউ অস্বীকার করে না। আরেকজন হিটলার যাতে তৈরি না হয়, সেই জন্য ইউরোপের দেশে দেশে আইন আছে, নাৎসীবাদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপটা হচ্ছে সমস্যাটা স্বীকার করতে হবে। এরপরে দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করা যাবে।
আমি বাংলাদেশি কমিউনিটিতে গিয়ে কখনো রাজনৈতিক আলাপ করি না। কিন্তু আমি না করলেও আলাপ শুরু হয়ে যায়। চোখ বন্ধ করা যায়, কিন্তু কান বন্ধ করা যায় না। বিএনপি আর জামাতের সরকার বিরোধী আন্দোলনে প্রায় প্রতিদিন বাংলাদেশে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারা হচ্ছে, কিন্তু এই কাজগুলো নাকি বিএনপি অথবা জামাতের না। এইগুলো সবই নাকি আওয়ামী লীগ করছে। এই ছাড়াও আরও অনেক তথ্য পাওয়া যায়। কিছুদিন আগে জানলাম ৯/১১ মার্কিন সরকারের কাজ। এর আগে একজন জানালেন যে আইসিসও আসলে পশ্চিমাদের এজেন্ট।
মানুষ এতো বলদ বা মূর্খ না। এই অস্বীকার ইচ্ছাকৃত। ৯/১১ বা আইসিস পশ্চিমাদের তৈরি হলে জঙ্গীবাদের সমাধান করার আর প্রয়োজন নেই। আওয়ামী লীগই যদি আগুন দিয়ে মানুষ মারে তাহলে বিএনপিকে জামাতি কলুষতামুক্ত করার কাজটা করার আর দরকার নেই।
অনেক বছর আগে ফুটবলের যাদুকর পেলে তাঁর টিম কসমসকে নিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন - প্রীতি ম্যাচ খেলতে। পত্রিকাতে পড়েছিলাম, পেলে নাকি প্রথমার্ধে কসমস আর দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিপক্ষের হয়ে খেলেছিলেন। তিনি সেই মাপে পৌঁছে গিয়েছেন, দুই দলের হয়েই খেলে দিতে পারেন।
এই সব বিশ্লেষণ শুনে শুনে আমার মাঝে মাঝে পেলের কথা মনে হয়। আওয়ামী লীগ সম্ভবত পেলের মাপের রাজনীতিতে পৌঁছে গেছে। শিক্ষিত বাংলাদেশিদের কথা অনুযায়ী, বিএনপি মিটিং করছে না, মিছিল করছে না, রাস্তাতেও নেই, আর বাসেও আগুন দিয়ে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি তাহলে কি করছেটা কি? আওয়ামী লীগই দেখি দুই সাইডে খেলছে।
বিএনপি-জামাত প্রতিদিন পুড়ায়ে মানুষ মারছে। এই সত্য কথাটা বলাটা খুব খুব কঠিন আমাদের জন্য, বিশেষত শিক্ষিত মানুষদের জন্য। কেননা এইটা স্বীকার করলেই বিএনপিকে দূষণমুক্ত করার দরকার পড়বে, জামাত নামক বিষফোঁড়া মুক্ত করার দরকার পড়বে।
ভালোবাসা আর ঘৃণা দুটোই মানুষের একদম মৌলিক অনুভূতি। ভালোবাসা ছোঁয়াচে কিন্তু ঘৃণা অনেক বেশি সংক্রামক এবং এর বিস্তার অনেক সরব। ঘৃণার সড়কে চলাচল দ্বিমুখি - আজকের পৃথিবীতে ঘৃণার সড়কে ট্র্যাফিক জ্যাম লেগে আছে, সেই ভিড় বাড়ছে আস্তে আস্তে। প্রতিদিনই নতুন নতুন জায়গা দখল করেই চলছে ক্রোধ আর প্রতিশোধের আগুন।
কিন্তু সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপটাই পার হতে পারিনি আমরা - নিজের ঘরে কতখানি নোংরা ময়লা আছে সেইটাই স্বীকার করতে পারি না।
আমরা প্যালেস্টাইনে ইজরাইল মানুষ মারলে হ্যাশট্যাগ দেই, সিরিয়াতে আইসিস মারলে চুপ করে থাকি। মার্কিন দেশে হেইট ক্রাইমে মুসলমান মরলে সরব হই, প্যারিসে পত্রিকা অফিসে গুলি চালালে সেই আওয়াজ না শোনার ভান করি। প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগে জাতি, ধর্ম, রাজনৈতিক বিশ্বাস, গায়ের রঙসহ আর যা যা আবজাব আছে সেইগুলো প্রথমে বের করি। আক্রান্ত মানুষগুলোর সাথে আমাদের কোন ঐক্য থাকলে সহমর্মি হই। দিনশেষে তাই আমরা মুসলমান অথবা হিন্দু অথবা বিএনপি অথবা আওয়ামী লীগ, কিন্তু আমরা কেউই মানুষ পরিচয়টা সামনে আনি না।
ঠিক এই কারনেই নিজের দেশে প্রধান বিরোধীদল দিনের পর দিন মানুষ মারলে সেটা এড়ায়ে যাই - পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্কে বলতে পারি না, এই বর্বরতা বন্ধ হোক।
No comments:
Post a Comment