আমি বড় হয়েছি এক অদ্ভুত সময়ে। শামসুর রাহমান যথার্থই লিখেছিলেন "উদ্ভট উটের পিঠে চলছে স্বদেশ"...সেই সময়টা ছিল ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তির উত্থানের সময়। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর যে দেশটি স্বাধীন হয়েছিল এক রক্তাক্ত সংগ্রামের পরে - সেই দেশেই প্রথম স্বাধীনতা বিরোধী মন্ত্রী হয় মাত্র ৮ বছরের মাথাতেই। পত্রপত্রিকা, বইতে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী, রাজাকার, আল-বদর এই শব্দগুলো বাদ দিয়ে বসানো হয় হানাদার বাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসর।
খাল কেটে কেটে ইতিহাসকেও অন্য দিকে নেওয়া যায় - সেইটাও জানা গেল।
শামসুর রাহমান আরও লিখেছিলেন...
"হে-পাক পারওয়ার দিগার, হে বিশ্বপালক,
আপনি আমাকে লহমায়
একজন তুখোড় রাজাকার করে দিন। তাহলেই আমি
দ্বীনের নামে দিনের পর দিন তেলা মাথায়
তেল ঢালতে পারবো অবিরল,
গরিবের গরিবী কায়েম রাখবো চিরদিন আর
মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ের চামড়া দিয়ে
ডুগডুগি বানিয়ে নেচে বেড়াবো দিগবিদিক আর সবার নাকের তলায়
একনিষ্ঠ ঘুণপোকার মত অহর্নিশ
কুরে কুরে খাবো রাষ্ট্রের কাঠামো, অব-কাঠামো।"
(একটি মোনাজাতের খসড়া)
সম্ভবত রাজাকারতন্ত্র নিয়ে এতো অল্পকথাতে এতো শক্তিশালী বাক্যমালা আর কেউই লিখতে পারেনি।
তখন কেউ কি কল্পনাও করেছিলও যে যুদ্ধাপরাধের বিচারের কাঠগড়ায় অপরাধীদের দাঁড়াতে হবে?
এই মগজ ধোলাইয়ের বিপরীতে যে ক্ষীণ স্রোত ছিল - এবং যে আমাদের অনেকের অজান্তেই সেটা বেগবান হয়েছে। ১৯৯২ সালে জাহানারা ইমামের গণআদালত সম্ভবত মিথ্যা ইতিহাসের চাকা ঘুরানো প্রথম ধাপ ছিল। তথ্যপ্রবাহ উন্মুক্ত হওয়ার পরে রেডিও টিভি দখল করে কে কি বলল সেটা হয়ত বিরাট কোন গুরুত্ব বহন করে না।
আমি শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থক। গণজাগরন মঞ্চ এই আন্দোলনের মুখে কালি লেপে দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে, আওয়ামী লীগ এটা থেকে যথাসাধ্য রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করেছে, বিএনপি/জামাত/হেফাজত নাস্তিক লেবেল মেরে মানুষ হত্যা করেছে...তবুও এই স্বতঃস্ফুর্ত আন্দোলন ছিল ৪০ বছর ধরে চলে আসা মিথ্যা আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে একদম যথার্থ এক প্রতিবাদ...
সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা...
খাল কেটে কেটে ইতিহাসকেও অন্য দিকে নেওয়া যায় - সেইটাও জানা গেল।
শামসুর রাহমান আরও লিখেছিলেন...
"হে-পাক পারওয়ার দিগার, হে বিশ্বপালক,
আপনি আমাকে লহমায়
একজন তুখোড় রাজাকার করে দিন। তাহলেই আমি
দ্বীনের নামে দিনের পর দিন তেলা মাথায়
তেল ঢালতে পারবো অবিরল,
গরিবের গরিবী কায়েম রাখবো চিরদিন আর
মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ের চামড়া দিয়ে
ডুগডুগি বানিয়ে নেচে বেড়াবো দিগবিদিক আর সবার নাকের তলায়
একনিষ্ঠ ঘুণপোকার মত অহর্নিশ
কুরে কুরে খাবো রাষ্ট্রের কাঠামো, অব-কাঠামো।"
(একটি মোনাজাতের খসড়া)
সম্ভবত রাজাকারতন্ত্র নিয়ে এতো অল্পকথাতে এতো শক্তিশালী বাক্যমালা আর কেউই লিখতে পারেনি।
তখন কেউ কি কল্পনাও করেছিলও যে যুদ্ধাপরাধের বিচারের কাঠগড়ায় অপরাধীদের দাঁড়াতে হবে?
এই মগজ ধোলাইয়ের বিপরীতে যে ক্ষীণ স্রোত ছিল - এবং যে আমাদের অনেকের অজান্তেই সেটা বেগবান হয়েছে। ১৯৯২ সালে জাহানারা ইমামের গণআদালত সম্ভবত মিথ্যা ইতিহাসের চাকা ঘুরানো প্রথম ধাপ ছিল। তথ্যপ্রবাহ উন্মুক্ত হওয়ার পরে রেডিও টিভি দখল করে কে কি বলল সেটা হয়ত বিরাট কোন গুরুত্ব বহন করে না।
আমি শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থক। গণজাগরন মঞ্চ এই আন্দোলনের মুখে কালি লেপে দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে, আওয়ামী লীগ এটা থেকে যথাসাধ্য রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করেছে, বিএনপি/জামাত/হেফাজত নাস্তিক লেবেল মেরে মানুষ হত্যা করেছে...তবুও এই স্বতঃস্ফুর্ত আন্দোলন ছিল ৪০ বছর ধরে চলে আসা মিথ্যা আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে একদম যথার্থ এক প্রতিবাদ...
সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা...