গত বছর দেশে যাওয়ার আগে আনুশা আর আমি খুব মনোযোগ দিয়ে টিভিতে বাংলাদেশের নিউজ দেখতাম। ওই সময় সরকার বিরোধীদের আন্দোলন চলছিল। নিউজের একটা বিরাট অংশ ছিল হরতাল, মহাসড়ক অবরোধ, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি।
"আব্বু হোয়াই ডিড দ্যাট গাই গেট ডাউন ফ্রম দ্য বাস থ্রু দ্য উইন্ডো?"
টিভির নিউজে একটা আক্রান্ত বাস দেখাচ্ছে, হরতালপন্থীরা ঢিল মারছে, পেছনের জানালা দিয়ে এক ভদ্রলোক তড়িৎগতিতে নেমে গেলেন। তার একটু পরেই বাসটাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হলো। সেই সঙ্গে চারিদিক বোমার শব্দে কেঁপে উঠলো।
আনুশার জিজ্ঞাসার শেষ নেই।
"আব্বু বাংলাদেশে সবাই কি এইভাবে বাস থেকে নামে?"
টিভির এই নিউজ দেখে যদি বাংলাদেশকে বিচার করতে হয় তবে মেনে নিতে হবে যে বাংলাদেশে সব সময় বাস এই ভাবেই থামে এবং যাত্রীরা সব জানালা দিয়ে
বের হয়ে যায়। এর পরেই হয়ত বাসটাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এটাই হয়ত বাসে চলাচলের স্বাভাবিক নিয়ম। ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখলে হীরক রাজার দেশ ছাড়া কোথাও এই নিয়ম থাকতে পারে না।
"পুলিশ কেন এই লোকটা মারছে?"
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাবলীর কোন ব্যাখা চলে না - অন্তত নয় বছরের মার্কিনি মেয়ের কাছে বোধগম্য করার মতো কিছু আমি পেলাম না। এই জিনিস বুঝতে হলে এক জীবন এই দেশে বাস করতে হবে।
"আব্বু - বাংলাদেশের পুলিশ কি গুড না ব্যাড?"
বাংলাদেশের পুলিশ হচ্ছে সর্বভুক, আমি ফার্মগেটে পুলিশকে রিকশাওয়ালার কাছে থেকে আধা খাওয়া বিড়ি পর্যন্ত ঘুষ খেতে দেখেছি। আগুনকে সর্বভুক না বলে পুলিশকে এই নাম দেওয়া উচিত। পুলিশ গুড না ব্যাড? এর উত্তর কি হতে পারে?
দেশে পৌছানোর পরেও সমস্যা কম না। এয়ারপোর্টের এক সিকিউরিটি গার্ড এবং এক গাড়ির ড্রাইভারের সামান্য তর্ক হচ্ছিল। সিকিউরিটি গার্ড থাপ্পড় মেরে সেই গাড়ির ড্রাইভারকে মাটিতে ফেলে দিল এবং সেই সাথে গোটা দুয়েক লাথিও জুটল লোকটার কপালে (আসলে অন্য জায়গাতে)। এর পরে কি হবে এই আশংকাতে আনুশা আমার হাত চেপে ধরল। কিন্তু দেখা গেল আক্রান্ত ড্রাইভার ভবিতব্যের মতো সে মার হজম করে উঠে দাঁড়ালো এবং তার নিজের কাজে ফিরে গেল।
দেশের রাস্তাতে ঘোরাঘুরির সমস্যাও কম না।
হোয়াই ডু পিপল কল ইচ আদার "কুত্তার বাচ্চা" হোয়েন দে গেট ম্যাড?
জানা গেল রাস্তাতে দুই জনের ঝগড়া থেকে এই জ্ঞান লাভ।
আনুশা থই পায় না - কুত্তার বাচ্চা মানে ডগ'স বেবি, মানে puppy, ইট'স অ্যা কিউট স্টাফ, হাউ ক্যান পিপল সে দিজ টু ইচ আদার হোয়েন দে আর ম্যাড?
আমি জানাতে বাধ্য হলাম যে এর "মোরাল ইক্যুভালেন্ট" গালাগাল ওর নিজের ভাষাতেও আছে।
এই নিয়ে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে আনুশা জেনে গেল যে "পিগ'স বেইবিও" বেশ খারাপ একটা গালি।
বাট দ্যাট ইজ সো নট ফেয়ার। হাউ স্টেঞ্জ!!! পিগের বেইবিরাও কত কিউট।
আব্বু হোয়াই ডু বুহা (বুয়া) কুকস ফুড - বাট নেভার ইট ইট?
কিভাবে বলা যায় যে আমরা একেকজন ছোটখাটো সম্রাট - "বুহাদের" আমাদের সাথে বসে খাওয়ার অনুমতি নেই।
নিজ দেশে ফেরার পরে আনুশা তার রায় জানিয়ে দেয়।
আব্বু বাংলাদেশের মানুষেরা খুব মিন...দে আর নেভার নাইস টু ইচ আদার...ওনলি ইয়োর অ্যান্ড মামা'স ফ্যামিলি অ্যান্ড ফ্রেন্ডজ আর নাইস।
আমাকে মিন মিন করে প্রতিবাদ করতে হয়। নিজের দেশের সম্মান বাঁচানোর একটাই উপায়। মার্কিনিরাও কত খারাপ এই উদাহরন আমি দেওয়ার চেষ্টা করি। ওরা রাস্তার পিটাপিটি না করলেও আকাশ থেকে দমাদম বোম মারছে হরদম...
এই দেশের ভেতরের এবং বাইরের নীতির সব নির্মমতা সুশীলতার মোড়কে মোড়া তাই সেটা বোঝা দুষ্কর, কিন্তু আমরা বাংলাদেশিরা আপেলকে রাগ করে পেয়ারা বলে ফেললেই দোষ...মেয়ের সরল জিজ্ঞাসা মাঝে মাঝে আমাকে অথই জলে ফেলে দেয়।
বাবা এবং মেয়ে...আমরা দুই দেশের মানুষ...মাঝে মাঝে এই টানাপোড়েনে আমার বোধদয় হয়...
আমরা আসলে দুই পৃথিবীর মানুষ।
"আব্বু হোয়াই ডিড দ্যাট গাই গেট ডাউন ফ্রম দ্য বাস থ্রু দ্য উইন্ডো?"
টিভির নিউজে একটা আক্রান্ত বাস দেখাচ্ছে, হরতালপন্থীরা ঢিল মারছে, পেছনের জানালা দিয়ে এক ভদ্রলোক তড়িৎগতিতে নেমে গেলেন। তার একটু পরেই বাসটাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হলো। সেই সঙ্গে চারিদিক বোমার শব্দে কেঁপে উঠলো।
আনুশার জিজ্ঞাসার শেষ নেই।
"আব্বু বাংলাদেশে সবাই কি এইভাবে বাস থেকে নামে?"
টিভির এই নিউজ দেখে যদি বাংলাদেশকে বিচার করতে হয় তবে মেনে নিতে হবে যে বাংলাদেশে সব সময় বাস এই ভাবেই থামে এবং যাত্রীরা সব জানালা দিয়ে
বের হয়ে যায়। এর পরেই হয়ত বাসটাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এটাই হয়ত বাসে চলাচলের স্বাভাবিক নিয়ম। ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখলে হীরক রাজার দেশ ছাড়া কোথাও এই নিয়ম থাকতে পারে না।
"পুলিশ কেন এই লোকটা মারছে?"
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাবলীর কোন ব্যাখা চলে না - অন্তত নয় বছরের মার্কিনি মেয়ের কাছে বোধগম্য করার মতো কিছু আমি পেলাম না। এই জিনিস বুঝতে হলে এক জীবন এই দেশে বাস করতে হবে।
"আব্বু - বাংলাদেশের পুলিশ কি গুড না ব্যাড?"
বাংলাদেশের পুলিশ হচ্ছে সর্বভুক, আমি ফার্মগেটে পুলিশকে রিকশাওয়ালার কাছে থেকে আধা খাওয়া বিড়ি পর্যন্ত ঘুষ খেতে দেখেছি। আগুনকে সর্বভুক না বলে পুলিশকে এই নাম দেওয়া উচিত। পুলিশ গুড না ব্যাড? এর উত্তর কি হতে পারে?
দেশে পৌছানোর পরেও সমস্যা কম না। এয়ারপোর্টের এক সিকিউরিটি গার্ড এবং এক গাড়ির ড্রাইভারের সামান্য তর্ক হচ্ছিল। সিকিউরিটি গার্ড থাপ্পড় মেরে সেই গাড়ির ড্রাইভারকে মাটিতে ফেলে দিল এবং সেই সাথে গোটা দুয়েক লাথিও জুটল লোকটার কপালে (আসলে অন্য জায়গাতে)। এর পরে কি হবে এই আশংকাতে আনুশা আমার হাত চেপে ধরল। কিন্তু দেখা গেল আক্রান্ত ড্রাইভার ভবিতব্যের মতো সে মার হজম করে উঠে দাঁড়ালো এবং তার নিজের কাজে ফিরে গেল।
দেশের রাস্তাতে ঘোরাঘুরির সমস্যাও কম না।
হোয়াই ডু পিপল কল ইচ আদার "কুত্তার বাচ্চা" হোয়েন দে গেট ম্যাড?
জানা গেল রাস্তাতে দুই জনের ঝগড়া থেকে এই জ্ঞান লাভ।
আনুশা থই পায় না - কুত্তার বাচ্চা মানে ডগ'স বেবি, মানে puppy, ইট'স অ্যা কিউট স্টাফ, হাউ ক্যান পিপল সে দিজ টু ইচ আদার হোয়েন দে আর ম্যাড?
আমি জানাতে বাধ্য হলাম যে এর "মোরাল ইক্যুভালেন্ট" গালাগাল ওর নিজের ভাষাতেও আছে।
এই নিয়ে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে আনুশা জেনে গেল যে "পিগ'স বেইবিও" বেশ খারাপ একটা গালি।
বাট দ্যাট ইজ সো নট ফেয়ার। হাউ স্টেঞ্জ!!! পিগের বেইবিরাও কত কিউট।
আব্বু হোয়াই ডু বুহা (বুয়া) কুকস ফুড - বাট নেভার ইট ইট?
কিভাবে বলা যায় যে আমরা একেকজন ছোটখাটো সম্রাট - "বুহাদের" আমাদের সাথে বসে খাওয়ার অনুমতি নেই।
নিজ দেশে ফেরার পরে আনুশা তার রায় জানিয়ে দেয়।
আব্বু বাংলাদেশের মানুষেরা খুব মিন...দে আর নেভার নাইস টু ইচ আদার...ওনলি ইয়োর অ্যান্ড মামা'স ফ্যামিলি অ্যান্ড ফ্রেন্ডজ আর নাইস।
আমাকে মিন মিন করে প্রতিবাদ করতে হয়। নিজের দেশের সম্মান বাঁচানোর একটাই উপায়। মার্কিনিরাও কত খারাপ এই উদাহরন আমি দেওয়ার চেষ্টা করি। ওরা রাস্তার পিটাপিটি না করলেও আকাশ থেকে দমাদম বোম মারছে হরদম...
এই দেশের ভেতরের এবং বাইরের নীতির সব নির্মমতা সুশীলতার মোড়কে মোড়া তাই সেটা বোঝা দুষ্কর, কিন্তু আমরা বাংলাদেশিরা আপেলকে রাগ করে পেয়ারা বলে ফেললেই দোষ...মেয়ের সরল জিজ্ঞাসা মাঝে মাঝে আমাকে অথই জলে ফেলে দেয়।
বাবা এবং মেয়ে...আমরা দুই দেশের মানুষ...মাঝে মাঝে এই টানাপোড়েনে আমার বোধদয় হয়...
আমরা আসলে দুই পৃথিবীর মানুষ।
No comments:
Post a Comment