আমি দেশ ছেড়েছিলাম এক বর্ষাকালের সকালে। ভোর বেলার আকাশে আস্তে আস্তে কালো মেঘ জমছে। বৃষ্টি তখনও নামেনি। কিন্তু জোর বৃষ্টির সম্ভবনা। বৃষ্টির দিনে নিজের ঘরে শুয়ে কাঁথামুড়ি দিয়ে বই পড়ার অভ্যেস ছিল। সেই সকালে সেসব কিছুর প্রস্তুতি নেই নি, বরং তাড়াহুড়া করে বিমানবন্দরে প্লেন ধরতে যেতে হয়েছে। দিনটার কথা আজকেও মনে পড়ে। আর কিছুদিন পরেই বিশ বছর হয়ে যাবে।
সেই সকালের বৃষ্টি দেখার আগেই ম্যাকডোনাল্ড ডগলাসের বিমান আমাকে একটানে নিয়ে গেছে দূরে। অনেক দূরে। বাংলাদেশের সীমানা পার হতে মাত্র মিনিট বিশেক লাগে। ওদের গতি আমি অর্জন করতে পারিনি। এই জীবনে তাই জন্মভূমি অতিক্রম করতে পারিনি। ইচ্ছে ছিল একদিন দেশে ফিরে সেই বৃষ্টির বাকি অংশ দেখবো। আরও অনেক অনেক পরিকল্পনার মতো এটাও বাস্তবায়ন হয় নি। আমি যে শুধু দেশ ছেড়ে চলে গেছি তা-না, কোন এক বিকেলে আবিষ্কার করলাম দেশটাও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। যেই আকাশটাকে রেখে এসেছিলাম ছাদের চিলেকোঠার উপরে, সেই ভদ্রলোক আমাকে কিছু না জানিয়েই উধাও!!! ফার্মগেটের ব্রিজ থেকে শুরু করে ধানমন্ডি লেকের পাড়ের ঘাসের গালিচা, সবাই কেমন অচেনা হয়ে গেছে। আমি ওদের কাউকে চিনি না ওরাও আমাকে না চেনার ভান করে। যেই বন্ধুদের ক্লাস সিক্সে রেখে এসেছিলাম - তারা সব বড় হয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে।
মার্কিন দেশ নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই। এই জায়গাটা আমি ভালোবাসি। সকালে লুপ ওয়ান থেকে বার্নেট রোডে এক্সিট নিতে ভুল হয় না। বিকেলে মাঝে মাঝে জ্যাম এড়ানোর জন্য মেট্রিক বুলেভার্ড দিয়ে বাসায় ফিরি। হেমন্তকালের বিকেলগুলো কেমন হলদেটে, ছায়াগুলো দীর্ঘ এবং দুঃখ দুঃখ মাখা। এই শহরটাকে হাতের তালুর মতো চিনি। কিন্তু দেশ বললে অন্য সেই শহরের কথা মনে হয়, যেটা হারিয়ে গেছে, জানি না কিভাবে, কখন এবং কেমন করে। এই শহরটাকে এতো
চেনার পরেও নিজের দেশ মনে হয় না।
যদিও ফেরার মতো ঘর আছে তবুও হঠাৎ ঘর ফিরতি নিজেকে কেমন উদ্বাস্তু মনে হয়। মানুষ নিজেকে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। হাঙ্গেরি আর জার্মানির সীমান্তে আটকে পড়া বাবা-মা-শিশুকন্যাকে দেখলে অথবা রাতের অন্ধকারে ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া হিন্দু পরিবারের খবর পড়লে মনে হয় আমিই হয়ত সপরিবারে দৌড়ে পালাচ্ছি - যাওয়ার মতো দেশ নেই কোথাও। এদের সাথে আমার পার্থক্য হচ্ছে, আমি নিজের ইচ্ছাতেই উদ্বাস্তু হয়েছি। আমি যদি নিজে উদ্বাস্তু এবং সংখ্যালঘু না হতাম, তাহলে হয়তো এই জীবনে ওই জুতোতে পা গলাতে পারতাম না।
২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখ সন্ধ্যাতে প্রথম লেখালেখি শুরু করি। দিনটা মনে আছে, কেননা তার পরদিন আমার বয়েস ৩৯ হবে। লেখালেখির মধ্যে আত্মপ্রকাশের আনন্দ আছে। পাঠকের কাছে পৌঁছাতে না পারলেও নিজের কাছে ঠিকঠাক পৌঁছানো যায়। কিছু কিছু লেখা পাখির পালকের মতো হালকা, কোন কোন লেখার ওজন জগদ্দল পাথরের মতো। কিন্তু লিখলে শান্তি লাগে। আমার যেই দেশটা কোথাও নেই - সেই দেশে পৌঁছাতে পারি। নেভার নেভার ল্যান্ডে যাওয়ার রাস্তাটা আমার জানা ছিল না - অর্ধেক জীবন পর্যন্ত।
এরপরে আরও ছয় বছর কেটে গেছে। আমি লিখে গেছি। সবই অন্তর্জালে। যেটাকে ব্লগ বলে। কোনদিন কোন লেখা ছাপানোর তাগিদ বোধ করি নি। ব্লগ ব্যাপারটা আবিষ্কারের অনেক অনেক আগে থেকে আমি ব্লগার। মনে মনে বহু জিনিস রচনা করেছি, আলস্য কাটিয়ে সেই মানসিক লেখনি কোথাও পৌঁছায়নি। কিন্তু যখন আত্মপ্রকাশের আনন্দ পেয়েছি - তখন থেকে লেখা বন্ধ করি নি।
সচলায়তনে ছয় বছর ধরে লিখছি। শৈশব থেকে শুরু করে টুকটাক গল্প বা ভ্রমণকাহিনি - সবই লেখার অপচেষ্টা করে গেছি। এই প্ল্যাটফর্মটার সাথে নানান দিক মানসিক একটা ঐক্য আছে। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে হিসেব পালটে গেল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগ উত্তাল। আমার শৈশবের বাংলাদেশ উলটোপথে চলেছে অনেক বছর - হঠাৎ কে যেন ঘুরিয়ে দিল রথের চাকা। আমি আবার নিজের দেশকে নিয়ে আশা দেখতে পেলাম।
কিন্তু সেই আনন্দ ছিল সাময়িক। অতিদ্রুতই আমার এবং অনেকেরই মোহভঙ্গ হলো। অচিরেই ধর্মের সাথে রাজনীতির গোপন যোগাযোগ যেন অনেক প্রকাশ্য হয়ে গেল। আমিই হঠাৎই যেন ভয়ংকর সাম্প্রদায়িক এক দেশকে দেখতে পেলাম। সেখানে ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন মতবাদের মানুষকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে ফেলা যায়, লাথি আর কোপ মেরে গর্ভপাত থেকে শুরু করে দেশছাড়া সব কিছুই করানো যায়। সরকার থেকে শুরু করে আমজনতা কেউই টু-শব্দটি পর্যন্ত করবে না।
এই দেশটাকে আমি চিনিনা, আমি কোনদিন এই দেশটার নাগরিক ছিলাম না। আমার হারিয়ে
যাওয়া দেশটা মাঝে মাঝে স্বপ্নে ফেরত আসতো, কিন্তু বর্তমানের ঘোর বাস্তবতার এই দেশ আমি দুঃস্বপ্নেও কোনদিন দেখি নি।
অনেক নিকটজন আমাকে লিখতে মানা করেছেন। আমি কোন স্পর্শকাতর (কিছু কিছু ব্যাপারে আমাদের কাতরতা সাংঘাতিক, আবার কিছু কিছু ব্যাপারে আমাদের উদাসীনতাও মারাত্মক) বিষয়ে লিখি না। এরপরও লেখা কমিয়ে দিয়েছি। আরও কমিয়ে দেব। হয়ত একদিন বন্ধও করে দেব।
সবাই বলে - এই দুই পয়সার ব্লগ লিখে কোন লাভ নেই। কিন্তু আমি কোন লাভের জন্য লিখি নি, দেশোদ্ধারের জন্য কলম ধরিনি, কাউকে প্রেম নিবেদনের জন্য একটি লাইনও লিখিনি, কারো জন্য ঘৃণা উগরে দেওয়ার জন্যও লিখিনি। প্রশংসা, তোষামোদ, সমালোচনা, ক্রোধ - কোন কিছুর জন্যও লিখি নি। লিখেছিলাম আনন্দের জন্য, একদম নিজের আনন্দের জন্যই। কেননা মাঝে মাঝে খুব সকালে বা গভীর রাতে অথবা আধোঘুমে আমার সেই দেশটা হাজির হয় - কানে কানে জিজ্ঞেস করে - "আমার কথা মনে আছে তো?"
লেখালেখি বন্ধ করে দিলে আরেকদফা উদ্বাস্তু হয়ে যাবো। এক জীবনে কয়বার ঘরছাড়া হওয়া যায়?
"সকাল হলে
একটি বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো
আজন্ম-পরিচিত মানুষ ছেড়ে চলে যাবো
মৃত্যুদন্ডিত
মৃত্যুদন্ডিতের মতো,
অথচ নির্দিষ্ট কোন দুঃখ নেই
উল্লেখযোগ্য কোনো স্মৃতি নেই
শুধু মনে পড়ে
চিলেকোঠায় একটা পায়রা রোজ দুপুরে
উড়ে এসে বসতো হাতে মাথায়
চুলে গুঁজে দিতো ঠোঁট
বুক-পকেটে আমার তার একটি পালক"
(সুনীল সাইফুল্লাহ)
####
সেই সকালের বৃষ্টি দেখার আগেই ম্যাকডোনাল্ড ডগলাসের বিমান আমাকে একটানে নিয়ে গেছে দূরে। অনেক দূরে। বাংলাদেশের সীমানা পার হতে মাত্র মিনিট বিশেক লাগে। ওদের গতি আমি অর্জন করতে পারিনি। এই জীবনে তাই জন্মভূমি অতিক্রম করতে পারিনি। ইচ্ছে ছিল একদিন দেশে ফিরে সেই বৃষ্টির বাকি অংশ দেখবো। আরও অনেক অনেক পরিকল্পনার মতো এটাও বাস্তবায়ন হয় নি। আমি যে শুধু দেশ ছেড়ে চলে গেছি তা-না, কোন এক বিকেলে আবিষ্কার করলাম দেশটাও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। যেই আকাশটাকে রেখে এসেছিলাম ছাদের চিলেকোঠার উপরে, সেই ভদ্রলোক আমাকে কিছু না জানিয়েই উধাও!!! ফার্মগেটের ব্রিজ থেকে শুরু করে ধানমন্ডি লেকের পাড়ের ঘাসের গালিচা, সবাই কেমন অচেনা হয়ে গেছে। আমি ওদের কাউকে চিনি না ওরাও আমাকে না চেনার ভান করে। যেই বন্ধুদের ক্লাস সিক্সে রেখে এসেছিলাম - তারা সব বড় হয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে।
মার্কিন দেশ নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই। এই জায়গাটা আমি ভালোবাসি। সকালে লুপ ওয়ান থেকে বার্নেট রোডে এক্সিট নিতে ভুল হয় না। বিকেলে মাঝে মাঝে জ্যাম এড়ানোর জন্য মেট্রিক বুলেভার্ড দিয়ে বাসায় ফিরি। হেমন্তকালের বিকেলগুলো কেমন হলদেটে, ছায়াগুলো দীর্ঘ এবং দুঃখ দুঃখ মাখা। এই শহরটাকে হাতের তালুর মতো চিনি। কিন্তু দেশ বললে অন্য সেই শহরের কথা মনে হয়, যেটা হারিয়ে গেছে, জানি না কিভাবে, কখন এবং কেমন করে। এই শহরটাকে এতো
চেনার পরেও নিজের দেশ মনে হয় না।
যদিও ফেরার মতো ঘর আছে তবুও হঠাৎ ঘর ফিরতি নিজেকে কেমন উদ্বাস্তু মনে হয়। মানুষ নিজেকে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। হাঙ্গেরি আর জার্মানির সীমান্তে আটকে পড়া বাবা-মা-শিশুকন্যাকে দেখলে অথবা রাতের অন্ধকারে ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া হিন্দু পরিবারের খবর পড়লে মনে হয় আমিই হয়ত সপরিবারে দৌড়ে পালাচ্ছি - যাওয়ার মতো দেশ নেই কোথাও। এদের সাথে আমার পার্থক্য হচ্ছে, আমি নিজের ইচ্ছাতেই উদ্বাস্তু হয়েছি। আমি যদি নিজে উদ্বাস্তু এবং সংখ্যালঘু না হতাম, তাহলে হয়তো এই জীবনে ওই জুতোতে পা গলাতে পারতাম না।
২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখ সন্ধ্যাতে প্রথম লেখালেখি শুরু করি। দিনটা মনে আছে, কেননা তার পরদিন আমার বয়েস ৩৯ হবে। লেখালেখির মধ্যে আত্মপ্রকাশের আনন্দ আছে। পাঠকের কাছে পৌঁছাতে না পারলেও নিজের কাছে ঠিকঠাক পৌঁছানো যায়। কিছু কিছু লেখা পাখির পালকের মতো হালকা, কোন কোন লেখার ওজন জগদ্দল পাথরের মতো। কিন্তু লিখলে শান্তি লাগে। আমার যেই দেশটা কোথাও নেই - সেই দেশে পৌঁছাতে পারি। নেভার নেভার ল্যান্ডে যাওয়ার রাস্তাটা আমার জানা ছিল না - অর্ধেক জীবন পর্যন্ত।
এরপরে আরও ছয় বছর কেটে গেছে। আমি লিখে গেছি। সবই অন্তর্জালে। যেটাকে ব্লগ বলে। কোনদিন কোন লেখা ছাপানোর তাগিদ বোধ করি নি। ব্লগ ব্যাপারটা আবিষ্কারের অনেক অনেক আগে থেকে আমি ব্লগার। মনে মনে বহু জিনিস রচনা করেছি, আলস্য কাটিয়ে সেই মানসিক লেখনি কোথাও পৌঁছায়নি। কিন্তু যখন আত্মপ্রকাশের আনন্দ পেয়েছি - তখন থেকে লেখা বন্ধ করি নি।
সচলায়তনে ছয় বছর ধরে লিখছি। শৈশব থেকে শুরু করে টুকটাক গল্প বা ভ্রমণকাহিনি - সবই লেখার অপচেষ্টা করে গেছি। এই প্ল্যাটফর্মটার সাথে নানান দিক মানসিক একটা ঐক্য আছে। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে হিসেব পালটে গেল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগ উত্তাল। আমার শৈশবের বাংলাদেশ উলটোপথে চলেছে অনেক বছর - হঠাৎ কে যেন ঘুরিয়ে দিল রথের চাকা। আমি আবার নিজের দেশকে নিয়ে আশা দেখতে পেলাম।
কিন্তু সেই আনন্দ ছিল সাময়িক। অতিদ্রুতই আমার এবং অনেকেরই মোহভঙ্গ হলো। অচিরেই ধর্মের সাথে রাজনীতির গোপন যোগাযোগ যেন অনেক প্রকাশ্য হয়ে গেল। আমিই হঠাৎই যেন ভয়ংকর সাম্প্রদায়িক এক দেশকে দেখতে পেলাম। সেখানে ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন মতবাদের মানুষকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে ফেলা যায়, লাথি আর কোপ মেরে গর্ভপাত থেকে শুরু করে দেশছাড়া সব কিছুই করানো যায়। সরকার থেকে শুরু করে আমজনতা কেউই টু-শব্দটি পর্যন্ত করবে না।
এই দেশটাকে আমি চিনিনা, আমি কোনদিন এই দেশটার নাগরিক ছিলাম না। আমার হারিয়ে
যাওয়া দেশটা মাঝে মাঝে স্বপ্নে ফেরত আসতো, কিন্তু বর্তমানের ঘোর বাস্তবতার এই দেশ আমি দুঃস্বপ্নেও কোনদিন দেখি নি।
অনেক নিকটজন আমাকে লিখতে মানা করেছেন। আমি কোন স্পর্শকাতর (কিছু কিছু ব্যাপারে আমাদের কাতরতা সাংঘাতিক, আবার কিছু কিছু ব্যাপারে আমাদের উদাসীনতাও মারাত্মক) বিষয়ে লিখি না। এরপরও লেখা কমিয়ে দিয়েছি। আরও কমিয়ে দেব। হয়ত একদিন বন্ধও করে দেব।
সবাই বলে - এই দুই পয়সার ব্লগ লিখে কোন লাভ নেই। কিন্তু আমি কোন লাভের জন্য লিখি নি, দেশোদ্ধারের জন্য কলম ধরিনি, কাউকে প্রেম নিবেদনের জন্য একটি লাইনও লিখিনি, কারো জন্য ঘৃণা উগরে দেওয়ার জন্যও লিখিনি। প্রশংসা, তোষামোদ, সমালোচনা, ক্রোধ - কোন কিছুর জন্যও লিখি নি। লিখেছিলাম আনন্দের জন্য, একদম নিজের আনন্দের জন্যই। কেননা মাঝে মাঝে খুব সকালে বা গভীর রাতে অথবা আধোঘুমে আমার সেই দেশটা হাজির হয় - কানে কানে জিজ্ঞেস করে - "আমার কথা মনে আছে তো?"
লেখালেখি বন্ধ করে দিলে আরেকদফা উদ্বাস্তু হয়ে যাবো। এক জীবনে কয়বার ঘরছাড়া হওয়া যায়?
"সকাল হলে
একটি বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো
আজন্ম-পরিচিত মানুষ ছেড়ে চলে যাবো
মৃত্যুদন্ডিত
মৃত্যুদন্ডিতের মতো,
অথচ নির্দিষ্ট কোন দুঃখ নেই
উল্লেখযোগ্য কোনো স্মৃতি নেই
শুধু মনে পড়ে
চিলেকোঠায় একটা পায়রা রোজ দুপুরে
উড়ে এসে বসতো হাতে মাথায়
চুলে গুঁজে দিতো ঠোঁট
বুক-পকেটে আমার তার একটি পালক"
(সুনীল সাইফুল্লাহ)