"আনুশা দুই কাপ চাল বের করে ধুয়ে বসায়ে দাও..."
আনুশাকে কিছু কাজকর্ম শেখানো হচ্ছে। ইংরেজিতে এদেরকে বলে - Chore। বাংলা চোর আর আর ইংরেজি চোরের তফাৎ অনেক। আমাদের দেশে প্রচুর চোর থাকলেও শৈশবে বাচ্চাদের Chore করতে হয় না।
যাই হোক এই "চৌরকর্মে" আনুশার অনীহা প্রবল। ছুটির দিনে সে বিছানা ছাড়তে চায় না। দুপুরবেলা পার করে ঘুম থেকে উঠে উদ্ভ্রান্ত মুখে ঘোরাঘুরি করে। আমিও যখন ছোট ছিলাম তখন সুযোগ পেলে সারাদিন ঘুমাতাম। এখন সেই সু্যোগও নেই, সেইরকম ঘুম দেওয়ার মতো স্টকও নেই ঘুমের।
"হোয়াট ইজ চাল আব্বু?" আনুশার বিস্মিত প্রশ্ন।
আমি এইবার বিস্মিত হই।
"চাল মানে হচ্ছে যেটা সিদ্ধ করলে ভাত হয়, যেই ভাত আমরা খাই..."
"তাহলে কথাটা হবে দুই কাপ ভাত বের করে বসায়ে দাও..."
"ভাত বের করলে তো আর সেটা বসাতে হবে না, ভাতটাই হচ্ছে ফিনিশড প্রোডাক্ট, চাল হচ্ছে সেটার কাঁচা রূপ..."
"দিজ ইজ স্ট্রেইঞ্জ...ভাত রান্না না করলে সেটাকে চাল বলে? ইজন্ট ইট উইয়ার্ড? ইংরেজিতে তো দুটোকেই রাইস বলে।"
আমি দমে গেলাম। ওরে সবুজ, ওরে আমার কাঁচা - কাঁচা চাল দিয়ে এই রকম চাল চালা যায় ভাবিনি।
"হোয়াই ইজ বাংলা লাইক দ্যাট?"
"মানে?"
ইতিমধ্যে আনুশার চৌরকর্ম আমিই শুরু করে দিয়েছি। চাল ধুতে ধুতে চিন্তা করছি আর কোন উদাহরণ আছে কিনা, রান্না না করলে এক নাম রান্না করার পরে আরেক নাম।
এমনই সময়ে দ্বিতীয় প্রশ্নবান উড়ে আসে।
"তোমরা কোক-টোক চাও, চা-টা চাও, হোয়াট ইজ টোক, হোয়াট ইজ টা?"
আনুশার ভাষাতে আমি "ভাত" ধুয়ে পরিস্কার করে পানি দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিলাম, উদ্দেশ্য হচ্ছে ভাত রান্না। দ্বিতীয় প্রশ্ন নিয়ে ভাবিত হই। কোক-টোক মানে সম্ভবত শুধু কোক নয়, কোকের কাছাকাছি পানীয়ও ইনক্লুডেড - ফান্টা আর পেপসিকেও "টোক" দিয়ে প্রকাশ করা যায়।
আনুশা এর মধ্যেই বাংলাকে জটিল ভাষা ঘোষণা করে নিজের রুমে চলে গেছে - বাংলা খুব কঠিন ভাষা, হাইস্কুলের জ্যামিতিও এরচেয়ে সোজা।
No comments:
Post a Comment