বার্নিকে ভোট দিছিলাম। দুইবার, প্রাইমারিতে। হেরে গেছেন।
হিলারিকে ভোট দিছিলাম। ওনার সানডে মানডে ক্লোজ হয়ে গেছে ইলেকশনে।
এমজেকে ভোট দিছিলাম হাউজে - সেও পারে নাই জিততে।
বেটোকে ভোট দিছিলাম সিনেটে - সেও লাড্ডা মারছে।
অনেক অনেক বছর আগে শেখ হাসিনাকে ভোট দিছিলাম। সেইখানেও একই অবস্থা।
ছাত্রসংসদ নির্বাচনে তুখোড় সমাজতন্ত্রিক প্রার্থী জয়দীপ দাশকে ভোট দিছিলাম। সেও ধরাশয়ী হইছে। সমাজতন্ত্রেরও প্রায় ইন্নালিল্লাহ অবস্থা। প্রাক্তন বামপন্থীরা সবাই আমেরিকাতে হিজরত করছেন। দেশে যারা আছে তারাও হজ্জ্ব টজ্জ করে লাইনে চলে আসছেন। বামদিকে তাকাইলে তাই "অপ্রকৃত" বামপন্থী বার্নি স্যান্ডার্সকে দেখতে পাই। বিপ্লব দীর্ঘজীবী হয় নাই। আমাদের কপালে ওই সব নাই। বুর্জোয়া বাম স্যান্ডার্সকেই হজম হয় না।
এইবার মার্কিন নির্বাচনের উত্তেজনা অনেক অনেক বেশি। গতবার এই সময়ে ট্রাম্পের এক্সেস হলিউড টেপ বের হয়ে গেছে। এমনই এক জিনিস যে অফিস থেকে বের হয়ে গাছের নিচে গিয়ে লো ভলিউমে শুনতে হইছে। ভাবছিলাম ট্রাম্প শেষ। ট্রাম্পের ভিপি পেন্সও কেটে পড়তে চাইছিল।
কিন্তু এই লালে লাল দুনিয়াতে ট্রাম্পের জিততে অসুবিধা হয় নাই। আমেরিকার ৩১০০ কাউন্টির মধ্যে ট্রাম্প ২৬০০ কাউন্টি জিতছে। ভোটের হিসাবে কম কিন্তু ট্রাম্পের ভোট প্রায় সর্বত্রই। হিলারির পপুলার ভোট বেশি, কিন্তু ভোট শহর কেন্দ্রিক। নিউইয়র্ক আর ক্যালিফোর্নিয়াকে বাদ দিলে ট্রাম্পের ভোট দুই মিলিয়ন বেশি হিলারির চেয়ে।
ট্রাম্প কি জিনিস সেইটা আমেরিকা তখনও জানতো। ট্রাম্প কি পদের সেইটা সম্ভবত এখন মানুষ আরও ভালো করে জানে। প্রথমবার হিলারির "ইমেইলের উপর রাগ করে" ভোট দিয়ে দিতে পারে মানুষ - কিন্তু এইবার? ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বার যদি কোন দেশের মানুষ নির্বাচিত করে সেই দেশ নিয়ে চিন্তার কিছু কারণ আছে।
তবে ডানপন্থার উত্থান সর্বত্রই হচ্ছে। ধর্ম এসে জায়গা করে নিচ্ছে মনোজগতে, বিজ্ঞান পাঠ্যবইয়ের ভেতরে সীমাবদ্ধ। দেশে দেশে উন্নতির একমাত্র পরিমাপ হচ্ছে ইকোনমি, চিন্তার প্রসরতা নয় - তাই বিজেপির জনপ্রিয়তার কমতি নেই, হেফাজতের মধ্যযুগের দাবীনামার সমর্থনের অভাব নেই, ট্রাম্পেরও ভোটেরও অভাব নেই। ট্রাম্প হঠাৎ করে আসে নাই, ট্রাম্পের আসা অবশ্যসম্ভাবী ছিল। দুশ্চিন্তা গোটা পৃথিবী নিয়েই করা যায়। আবার চোখ, কান আর মাথা বন্ধও রাখা যায়।
গতবারের মতো এইবার ডেমোক্রেটরা বিজয়কে নিশ্চিত ধরে নাই। তারা চেষ্টা করতেছে। শুধু প্রেসিডেন্ট ইলেকশন না, এমনকি টেক্সাসেও লোকাল ইলেকশনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। ভালো ব্যাপার এইটা।
এইবার বাইডেন কাকাকে আর কমলা আপুকে ভোট দিলাম, এমজেকে সিনেটে ভোট দিলাম, আমাদের বাংলাদেশি মেয়ে ডোনাকে হাউজে ভোট দিলাম। লাইন ধরে নীল রং এ সমর্থন দিলাম। লাল মানেই বিপদ।
কুফা লাগলো নাকি কুফা কাটলো? উত্তর রূপালি পর্দায়, নভেম্বরের তিন তারিখ।
No comments:
Post a Comment