Tuesday, January 5, 2021

এনচ্যান্টেড রক

Enchanted Rock - এই পাহাড়টার নাম। অস্টিন থেকে ১০০ মাইল দূরে। একটু দূর থেকে দেখলে মনে হয় মাটি ফুঁড়ে পাথরের একটা গ্রানাইটের স্তুপ বের হয়ে গেছে। পাহাড়টার শরীর বেশ মসৃণ - গ্রানাইটের তৈরি সেই জন্যই। আরেকটু ঘষামাজা করলে সম্ভবত কিচেনের গ্রানাইটের মতো মসৃণ হয়ে যেতে পারে। এনচ্যান্টেড রকের উপরে খুব বেশি গাছপালা নেই। যদিও চারিদিকটা বেশ সবুজ। প্রথম মানুষ এখানে পা রেখেছিল ১১ হাজার বছর আগে। আমরা সব কিছুতেই লেইট। আমরা আগে একবার গিয়েছিলাম, কিন্তু উপরে উঠা হয় নি। অনেকদিন ধরেই এই পাহাড়ের চূড়াতে উঠার শখ আনুশার। বাকেট লিস্টে আছে।

গত সোমবার লং উইকেন্ডে সেখানে যাওয়া হল। আমরা পাহাড়ের কাছে পৌঁছাতেই টিপটিপ বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। এনচ্যান্টেড রকের উচ্চতা ১৮০০ ফিটের মতো। এই এলাকার ডাক নাম হচ্ছে হিল কান্ট্রি। খুব উঁচু পাহাড় নয়, কিন্তু চারিদিক দৃষ্টি নন্দন ও সবুজ। সামান্য বৃষ্টিতে আরও সুন্দর লাগছিল। মেঘগুলো মাঝে মাঝে এসে পাহাড়ের চূড়াতে জমা হয়ে ছিল।

পাহাড়টাতে মূলত দুটো ট্রেইল। একটা ট্রেইল চূড়াতে উঠেছে। অপরটা চারিদিক বেষ্টন করেছে। চূড়াতে উঠতে ৪৫ মিনিটের মতো লাগে। চারিদিকে ঘুরে আসতে ঘন্টা তিনেকের মতো লাগে। পৌঁছে জানা গেলে উপরে উঠার ট্রেইলটা বন্ধ, কেননা গ্রানাইটের পাহাড়ে বৃষ্টি হলে সেখানে থেকে আছাড় খেয়ে নিচে পড়ার সমূহ সম্ভবনা থাকে।

রেঞ্জার স্টেশনে একটা ভিডিও চলছিল। সেখানে নানান ধরণের সাপের ছবি দেখানো হচ্ছিল। আমি সাপের কথা জিজ্ঞেস করলাম পার্ক রেঞ্জারদের। টেনিদার এক গল্পে (চারমূর্তি) একজন অবাঙ্গালী জিজ্ঞেস করেছিলেন - জঙ্গলে ভাল্লুক আছে কিনা, এবং তারা মানুষকে কামড়াচ্ছেন কিনা - উত্তর ছিল সুযোগ পেলেই কামড়াচ্ছেন। আমার প্রশ্নটাও সেই ধারার হল। ট্রেইলের আশেপাশে সাপ কোন বিরল বস্তু না। কিন্তু তারা সুযোগ পেলেই কামড়াচ্ছেন না। সাপ মানুষকে ভয় পায়। মানুষ দেখলে তারা পালাতে চায়। তাদের সাথে দেখা হলে ভয়ের কিছুই নেই। আমরা পৌঁছানোর ৩০ মিনিট আগেই ট্রেইলে সাপ দেখা গেছে। বৃষ্টির দিনে তারা ঘর থেকে বেশি বের হয়। কিন্তু ধাওয়া আর পাল্টা ধাওয়ার সম্পর্ক না থাকলে শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থান সম্ভব।

সবচেয়ে বেশি সর্পাতংক দেখা গেল আনুশার। ট্রেইলে প্রচুর মানুষ। প্রাণী জগতের সবচেয়ে হিংস্র আর ভয়াবহ প্রাণী মানুষ। অন্য সব প্রাণী আমাদের ভয় পায়। টেকনিক্যালি ট্রেইলে মানুষ থাকাই সবচেয়ে বিপদজ্জনক ব্যাপার। এইসব বলে আমি আনুশার ভয় কাটানোর চেষ্টা করলাম। চারিদিক মনোরম। আকাশে প্রচুর মেঘ। বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে। তাপমাত্রা খুব অনুকূল। সব দিকেই দিগন্ত দৃশ্যমান। কোথাও কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে। চুপ করে একটা জায়গাতে দাঁড়িয়ে প্রকৃতি নৈঃশব্দ সঙ্গীত শোনা যায়। অস্টিন থেকে মাত্র দুই ঘন্টা দূরে এতো সুন্দর একটা জায়গা ছিল সেটা ভুলে গিয়েছিলাম। বৃষ্টিটা আজকে বোনাস প্রাপ্তি।

উপরে ওঠার ট্রেইল বন্ধ। তাই অপর ট্রেইল, যেটা পাহাড়ের চারিদিকে ঘিরে সেটাতে হাঁটা শুরু করলাম। হাঁটছি, থামছি, দূরের মেঘ আর বৃষ্টি দেখছি, বুনোফুল দেখছি, কাঠবিড়ালি দেখছি, আনুশা তীক্ষ্ণ নজর রাখছে কোন পথভোলা সাপ সামনে এসে দাঁড়ায় কিনা। তবে সৌন্দর্যের সামনে ভয় কোন ব্যাপারই না। আমরা প্রায় এক ঘন্টা হাইক করলাম।

একটু পরে অবশ্য বৃষ্টি আর দূরে রইল না। আমাদের মাথার উপরেই টিপটিপ করে পড়া শুরু হল। আকাশের অবস্থা দেখে মনে হল অচিরেই এটা টিপটিপ থেকে কুকুর বেড়ালে রূপ নেবে। আর হাইক নয়, আমরা অর্ধেক ট্রেইল থেকে উল্টো দিকে দৌড় দিলাম। হাঁপাতে হাঁপাতে গাড়িতে পৌঁছানোর সাথে সাথে ঝমঝম বৃষ্টি শুরু হল। বাকি ট্রেইল আর সামিট পরের ট্রিপের জন্য রেখে দিলাম। সাপ ধাওয়া না দিলেও বৃষ্টি ধাওয়া দিতে পারে।

আবারও অনেকবার যেতে হবে এখানে। বারবার যাওয়ার মতো একটা জায়গা। শীতকালে যাবো - সাপেরা তখন টেনে ঘুম দিবে। পরেরবার যাওয়ার আগে এনচ্যান্টেড রকের সুন্দর একটা বাংলা নাম খুঁজছি। রবীন্দ্রনাথ সব কিছুর নাকি বাংলা নাম দিয়ে দিতেন। রবিদাকে মিস করি।

নিচে এনচ্যান্টেড রকের নামকরণের গল্পটা জুড়ে দিলাম।

Folklore of local Tonkawa, Apache and Comanche tribes ascribes magical and spiritual powers to the rock (hence the name 'Enchanted Rock'). While attempting to hide from Anglo settlers in the area, the natives would hide on the top two tiers of the rock, where they were invisible from the ground below.

The first European to visit the area was probably Álvar Núñez Cabeza de Vaca in 1536. The Tonkawa, who inhabited the area in the 16th century, believed that ghost fires flickered at the top of the dome.

In particular they heard unexplained creaking and groaning, which geologists attribute to the rock's night-time contraction after being heated by the sun during the day. The name "Enchanted Rock" derives from Spanish and Anglo-Texan interpretations of such legends and related folklore.

No comments: